Thursday, October 20, 2011

ভয়ংকর রূপ দেখা দিল ভারতের র‌্যগিংয়ে

্যাগিংয়ের কারণে সন্তান হারানো বাবা-মায়ের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে ভারতে। নিয়ে শঙ্কিত চিন্তিত তারা। ্যাগিংয়ের কারণে ভারতে প্রতি বছর মারা যাচ্ছে অনেক শিক্ষার্থী। আর সন্তান হারানো এমন এক পিতা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ্যাগিং বন্ধে শুরু করেছেন সামাজিক আন্দোলন।
ছেলে হারানো এই পিতার নাম রাজেন্দ্র কাচুরি। তাঁর ১৯ বছরের ছেলে আমানকে হিমাচল প্রদেশের টানডা মেডিকেল কলেজে ভর্তি করেছিলেন।
কিন্তু ্যাগিংয়ের শিকার হয়ে আমান মারা যান। এর পরই কাচুরি শুরু করেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ্যাগিংসহ নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষায় আন্দোলন। গঠন করেছেন ্যাগিংবিরোধী হেল্পলাইন। এখানে ্যাগিংয়ের শিকার হওয়া শিক্ষার্থীরা তাঁদের অভিযোগের কথা জানাবেন। আর সে অনুয়ায়ী ব্যবস্থা নিতে কাজ করছেন তিনি।
আমান মেডিকেলে ভর্তির পর আর দশজনের মতোই গর্বিত ছিলেন তাঁর মা-বাবা প্রিয়া রাজেন্দ্র কাচুরি। কিন্তু দ্রুতই দৃশ্যপট বদলে যায়। রাজেন্দ্র কাচুরি বলেন, ‘ছেলের জন্য সেখানে কী অপেক্ষা করছে, সে ব্যাপারে আমাদের কোনো ধারণা ছিল না। শুরু থেকে আমার সন্তানের ওপর যে নির্যাতন পীড়ন চলেছে, তা বর্ণনাতীত। জ্যেষ্ঠদের শিক্ষার্থীদের এই নিপীড়নের কারণেই আমান পৃথিবী থেকে বিদায় নেয়।
আমানের মা বলছিলেন, ‘সেখানে যে এত খারাপ পরিবেশ ছিল, আমি বুঝতে পারিনি। যখন সে বাসায় আসে, তখন বুঝতে পারি সমস্যা গুরুতর। আমান আমাদের বলছিল, এটা নিয়ে দুশ্চিন্তা করার কিছুই নেই।
ছাত্রাবাসের জ্যেষ্ঠ কয়েকজন ছাত্র ২০০৯ সালের এক রাতে আমানকে বেদম পেটান। আমান এতে মাথায় আঘাত পায় এবং পরে মারা যান। মারা যাওয়ার ঘণ্টাখানেক আগে তাঁর বাবাকে সেদিনের ঘটনা জানিয়েছেন আমান। কীভাবে এবং কী ঘটেছে, বাবাকে তাও জানান আমান। এরপর মারা যান তিনি।
স্বজনেরা আমানের কক্ষে তাঁর জিনিসপত্র আনতে গিয়ে কিছু চিরকুট পান। এসব চিরকুটে লেখা ছিল্যাগিং’, ‘আসামিদের মতো নির্যাতন’, ‘স্বৈরশাসক তাঁর সর্বশেষ লেখা ছিলচপেটাঘাত মারতে দেবেন না
আমানের মৃত্যুর বছর দুয়েক আগে র্যাগিংয়ের আরেকটি ঘটনা দিয়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছিল। মেডিকেলের চার ছাত্রকে কারণে দোষী সাব্যস্ত করে দণ্ডও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ট্র্যাজেডি ভারতে প্রথম বা শেষ ঘটনা নয়। র্যাগিংয়ের কারণে বছরখানেক ধরে কলেজ ক্যাম্পাসগুলোতে একাধিক ছাত্র আত্মহত্যা করেছেন, মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছেন, অনেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছেড়েছেন। আমানের মৃত্যুর পর কারণে এখন পর্যন্ত ৩০টিরও বেশি আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে বলে জানান রাজেন্দ্র কাচুরি।
ছেলের মৃত্যুর পর আমানের বাবা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ্যাগিং বন্ধে কাজ শুরু করেছেন। তিনি ভারতের সুপ্রিম কোর্টে নিয়ে মামলাও করেছেন। এখন ভারতের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ্যাগিং-বিরোধী হেল্পলাইন খোলা হয়েছে। এখানে ছাত্ররা ফোনে কথা বলেন, অভিযোগ শোনেন। এটা ভারতীয় কল সেন্টারের মতোই। এই হেল্পলাইন চালু হওয়ার প্রথম ছয় মাসে দেড় এক লাখ শিক্ষার্থী ্যাগিংয়ের অভিযোগ করেছে। গত দুই বছরে তাঁরা আড়াই লাখ অভিযোগ পেয়েছেন। এর মধ্যে ৮৫০টি অভিযোগ গুরুতর। এটা বিশাল এক বরফস্তূপের একটি খণ্ডমাত্রবলছিলেন রাজেন্দ্র কাচুরি। আর যেদিন এই হেল্পলাইনে একটিও অভিযোগ আসবে না, তখনই কাচুরি ক্ষান্ত হবেন বলে জানান। সিএনএন

0 comments:

Post a Comment

Share

Twitter Delicious Facebook Digg Stumbleupon Favorites More